30 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
spot_img

কোটি টাকার পানির পাম্প, উদ্বোধনের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ধসে পড়লো খানিকটা অংশ

মোহাম্মদ শাহআলম মিয়া, ব্যুরো চিফ,জনতার আদালত.কম, ঝিনাইদহ –

প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানির পাম্পটি উদ্বোধনের মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে ধসে পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে পাম্প হাউজ ঘরের মেঝের অনেকটা অংশ ধসে পড়েছে। দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। পানির লাইন স্বাভাবিক থাকলেও ভবনের নিচে সুড়ঙ্গ তৈরী হওয়ায় সেই লাইনটিও ঝুকির মধ্যে রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভা এলাকার নওদাগায় সদ্য স্থাপিত পানির পাম্পে।

স্থানীয়রা বলছেন, গত রবিবার দুপুরে পৌরসভার মেয়র মোঃ সহিদুজ্জামান সেলিম এই পাম্প এর পানি সরবরাহ কাজের উদ্বোধন করেন। করোনা পরিস্থিতির কারনে কোনো আনুষ্টানিকতা না করে এলাকার মানুষের পানির প্রয়োজনে পাম্পটি চালু করার ব্যবস্থা করেন। এ সময় পৌর মেয়রের সঙ্গে স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রকিব উদ্দিন সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোজ নিয়ে জানা গেছে, কোটচাঁদপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড নওদাগা ও কাশিপুরের অংশ বিশেষের মানুষের পানির প্রয়োজনে গভির নলকুপটি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কাজটি বাস্তবায়ন করছেন। ওই দপ্তরের কোটচাঁদপুরস্থ উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জিল্লুর রহমান জানান, পাম্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের শেষ দিকে। তিনি পরে এই উপজেলায় যোগদান করেছন। তিনি যতদুর জানেন দুইজিন ঠিকাদার কাজটি করেছেন। পানির লাইনের কাজ এর জন্য প্রায় ৬০ লাখ আর ভবনের জন্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ করা হয়। কাজটি দুইজন ঠিকাদারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়েছে। নানা জটিলতায় কাজটি বিলম্ব হয়েছে। তারপরও শেষ করে সদ্য চালু করা হয়েছে।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রকিব উদ্দিন জানান, পাম্পটি তার নির্বাচনী এলাকায় বসানো হয়েছে। এই পাম্পের মাধ্যমে নওদাগা, কাশিপুর ও শহরের কিছু অংশের গ্রাহকরা পানি পাবেন। পাম্পটিতে যে মটর বসানো হয়েছে তা দিয়ে এক মিনিটে ১৩ লিটার পানি উত্তোলিত হবে। এই পাম্পের আওতায় ১২ শত গ্রাহককে সেবা দেওয়া যাবে। বর্তমানে তার এলাকায় মাত্র ১৫০ জন গ্রাহক রয়েছে। তিনি জানান, পাম্পটি এলাকার মানুষের কল্যানে নির্মিত হলেও উদ্বোধনের পরই ধসে পড়াই আদৌ মানুষের উপকারে আসবে কিনা তা নিয়ে শংসয় দেখা দিয়েছে।

নওদাগা গ্রামের মাহাতাব আলী জানান, ২ বছরের অধিক সময় ধরে এই পাম্পটি তৈরী করা হয়েছে। এরপর গত রবিবার দুুপরে চালু করার পরদিনই দেখা যায় পাম্প ভবনের নিচের অংশ থেকে মাটি ধসে পড়েছে। সেখানে সুড়ঙ্গ তৈরী হয়েছে। পাম্পের চালক কোটচাঁদপুর পৌরসভার কর্মচারি সাইদুল রহমান জানান, রবিবার মেয়র সহ অন্যরা এসে এটি আনুষ্ঠানিক চালু করে যান। তিনি পরদিন সকালে এসে দেখেন মাটি ধসে যেতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ভবনের সামনের অংশের অনেকটা ধসে গেছে। ভবনটিও ফাটল ধরে গেছে। তবে পানির লাইন এখনও ঠিক আছে। কিন্তু এভাবে মাটি ধসে যেতে থাকলে পানির লাইনেরও ক্ষতির আশংকা রয়েছে। আর যেভাবে ভবনটি ফাটল ধরেছে তাতে ওই ভবনে প্রবেশ করতে এখনই ভয় লাগছে।

পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা জানান, কাজটি দেখভাল করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। তারা মাঝে মধ্যে খোজখবর নিয়েছেন। এখন এই পরিস্তিতিতে তারা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বিভাগকে দ্রুত দেখার জন্য জানিয়েছেন। পৌরসভার মেয়র মোঃ সহিদুজ্জামান সেলিম জানিয়েছেন, ঠিকাদাররা এই কাজের বিল নিয়ে গেছেন। তারপরও তারা কাজটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলেছেন। আশা করছেন দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। আর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের স্থানীয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জিল্লুর রহমান জানান, তারা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা মেরামত করে দিতে সম্মত হয়েছেন। তবে লকডাউনের কারনে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে বলে জানান। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের প্রধান কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোমিনুল হক জানান, বিসয়টি নিয়ে তারা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাথে থাকুন

13,562FansLike
5,909FollowersFollow
3,130SubscribersSubscribe

সর্বশেষ